মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও:

বৃহত্তর ঈদগাঁওতে চুরি-চামারী বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকাবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে। গত ১ সপ্তাহে একাধিক দূর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় জনমনে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে এলাকার অপরাধ কর্ম নির্মূলে পুলিশ সবসময় সজাগ রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী পশ্চিম পাড়ার ফিরোজ আহমদের বাড়ীতে দূর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়। ১৭ অক্টোবর গভীর রাতে সংঘবদ্ধ চোরের দল বাড়ীর ভেন্টিলেটর ভেঙ্গে সাড়ে ৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ২২ হাজার টাকা, ইসলামী ব্যাংকের ২টি চেক বই চুরি করে নিয়ে যায়। স্বর্ণালঙ্কারের মূল্য আনুমানিক ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় পাশর্^বর্তী মধ্যম মাইজ পাড়ার বশির আহমদের পুত্র মোহাম্মদ ঈসমাইল (২৮) ও ছৈয়দ হোছনের পুত্র নুুরুল আবছার প্রকাশ পুতিয়া (৩০)কে সন্দেহজনক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার স্বীকারোক্তি দেয়। পরে তাদেরকে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে সোপর্দ করা হয়। পরদিন ১৮ অক্টোবর উক্ত ঘটনায় ভূক্তভোগীর পুত্র মোহাম্মদ মামুন বাদী হয়ে কক্সবাজার মডেল থানায় উল্লেখিত দুজনের বিরুদ্ধে চুরির মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৪৭। এদিকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক মোহাম্মদ ঈসমাইল স্বীকার করে যে, চোরাই স্বর্ণালঙ্কার তার মামা মোহাম্মদ করিমের বাড়ীতে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ উক্ত বাড়ী থেকে চোরাই স্বর্ণালঙ্কারের আংশিক তথা ৪ ভরি ৬ আনা উদ্ধার করতে সক্ষম হন। তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ মো. খায়রুজ্জামান জানান, আটক ২ পেশাদার চোরকে উক্ত মামলার আসামী হিসেবে তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার আবেদন জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ সরকার বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছেন। ভূক্তভোগীর পুত্র মোহাম্মদ মামুন জানান, আটক যুবকরা দীর্ঘদিন এলাকায় চুরি ও নানা অপকর্মে জড়িত রয়েছে মর্মে জনশ্রুতি আছে। এসআই দেবাশীষ সরকার জানান, বাকী স্বর্ণালঙ্কার, চোরাই টাকা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট উদ্ধারের প্রচেষ্টা চলছে।

এদিকে ঈদগাঁও জাগির পাড়া থেকে ১৯ অক্টোবর গভীর রাতে চোরাই সুপারিসহ এক মাদকসেবী দূর্ধর্ষ চোরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। সে মাদকের টাকা যোগাড় করতে উক্ত এলাকার লিটন মল্লিকের বসতভিটা থেকে তিন পিয়ল আধা কাঁচা সুপারি চুরি করার সময় এলাকার যুবকরা ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলে। স্থানীয় মেম্বার মমতাজ আহমদ জানান, দেলোয়ার নামে এ ছেঁচড়া চোর ইতিপূর্বে জাগির পাড়ার আনোয়ারুল আজাদ ও আলমাছিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন ভাড়া কলোনীতে বসবাসরত ঈদগাহ জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আহমদ কবিরের বাসা থেকে যথাক্রমে লোহার রড ও অন্যান্য মূল্যবান মালামাল চুরি করে। তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ মো. খায়রুজ্জামান জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির খবরের ভিত্তিতে এএসআই আহসান মোর্শেদ আলমাছিয়া রোড এলাকা থেকে চোরাই সুপারিসহ তাকে আটক করে। সংঘটিত ঘটনায় তাকেও কোর্টে চালান দেয়া হয়।

অন্যদিকে কয়েকদিন আগে ঈদগাঁও জাগির পাড়ার হোমিও চিকিৎসক ডা. মাওলানা এনামুল হকের বাড়ী থেকে বাই সাইকেল, বিদেশী কম্বলসহ মূল্যবান মালামাল প্রকাশ্য দিনের বেলা চুরি হয়ে যায়। এসময় তিনি সপরিবারে কক্সবাজারস্থ তার শ্যালকের এনগেইজমেন্ট অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। বিষয়টি তিনি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এক কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে অবহিত করেছেন বলে জানান। আর চোরাই বাই সাইকেলটি জালালাবাদ তেলিপাড়ার এক লোকের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে বলে খবর পেয়েছেন তিনি। এদিকে উপুর্যপুরী চুরির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকদের মধ্যে চোর আতঙ্ক বিরাজ করছে। জনমনে পুলিশী তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন বলে দাবী করেছেন ইনচার্জ মো. খায়রুজ্জামান।